বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত pdf

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত pdf: বিখ্যাত বাঙালি কবি ও লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত  “আমার সোনার বাংলা” কবিতাটির প্রথম ১০ লাইন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসাবে পরিচিত। এটি দেশের স্বাধীনতার প্রতীক এবং বাঙালি জাতির আবেগ, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতিফলন। এই গানটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা ও দেশপ্রেমের প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়। জাতীয় সংগীতের মূল কবিতা সম্পর্কে নিচে আলাচনা করা হয়েছে এবং মূল কবিতাটি তুলে ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হলো “আমার সোনার বাংলা”। এটি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত একটি কবিতা, যা পরবর্তীতে সংগীত রূপে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে গৃহীত হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এটি দেশের স্বাধীনতা ও জাতীয়তাবাদের প্রতীক হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।

Table of Contents

জাতীয় সংগীতের প্রথম দশ চরণ:

আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস,
আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি॥
ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে
ঘ্রাণে পাগল করে, মরি হায়, হায় রে—
ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে
আমি কী দেখেছি মধুর হাসি॥
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।

এটি দেশের স্বাধীনতা, মাটির প্রতি ভালোবাসা এবং ঐতিহ্যের প্রতীক।

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত “আমার সোনার বাংলা” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি কবিতার অংশ। এটি তার “গীতবিতান” কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত। পুরো কবিতাটি ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের সময় লেখা হয়েছিল। তবে, বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে এর প্রথম ১০ চরণ গৃহীত হয়েছে।

“গীতবিতান” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত একটি বিশাল সংগীত সংকলন, যেখানে তার লিখিত সমস্ত গানের কথা ও সুর সংরক্ষিত রয়েছে। এটি তার গানের এক অনন্য ভাণ্ডার, যা বাংলা সাহিত্য এবং সংগীতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রচনা হিসেবে বিবেচিত হয়। গীতবিতান দুটি খণ্ডে বিভক্ত এবং এতে ২,২৩২টি গান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

গীতবিতানের বিভাগগুলো:

  1. পূজা (ভক্তিমূলক গান)
  2. প্রকৃতি (প্রকৃতির প্রতি উৎসর্গিত গান)
  3. প্রেম (প্রেমসংক্রান্ত গান)
  4. স্বদেশ (দেশাত্মবোধক গান)
  5. বিচিত্র (বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখা গান)

গীতবিতানে রবীন্দ্রনাথের জীবনবোধ, প্রেম, প্রকৃতি, আধ্যাত্মিকতা, এবং দেশের প্রতি ভালোবাসা ফুটে উঠেছে। এটি বাংলা ভাষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংগীত সংকলন হিসেবে বিবেচিত, এবং এর গানগুলো “রবীন্দ্রসঙ্গীত” নামে খ্যাত।

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত pdf
বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত pdf

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত (pdf):

জাতীয় সংগীতের মূল কবিতা টি মোট ২৫ লাইনের। অনেকেই এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানেন না। মূলতঃ রবিন্দ্র নাথ ঠাকুর রচিত “আমার সোনার বাংলা” নামক কবিতাটি ২৫ লাইনের। নিন্মে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত সম্পূর্ণ কবিতাটি তুলে ধরা হলোঃ

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত (pdf)

(২৫ লাইনের মূল কবিতা)

আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি॥
ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে,
মরি হায়, হায় রে—
ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি॥

কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো—
কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে।
মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো,
মরি হায়, হায় রে—
মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি॥

তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিল রে,
তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি।
তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে,
মরি হায়, হায় রে—
তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি॥

ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে,
সারা দিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে,
তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে,
মরি হায়, হায় রে—
ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, ও মা, তোমার রাখাল তোমার চাষি॥

ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে–
দে গো তোর পায়ের ধূলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে।
ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে,
মরি হায়, হায় রে—
আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ ব’লে গলার ফাঁসি॥

( বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত pdf )

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত রচনার সময় ও প্রেক্ষাপট

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত “আমার সোনার বাংলা” রচনা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯০৫ সালে। এই গানটি লেখা হয়েছিল তখনকার সময়ে ভারতের বেঙ্গল অঞ্চলের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে। বিশেষ করে, বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় এটি রচিত হয়, যা ব্রিটিশ সরকারের বিভাজনের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বাংলা ভাষাভাষী জনগণের ঐক্য এবং প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে দাঁড়ায়।

প্রেক্ষাপট:

  • বঙ্গভঙ্গ (১৯০৫): ১৯০৫ সালে ব্রিটিশ শাসক লর্ড কার্জন বাংলাকে দুই ভাগে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেন। এর ফলে পূর্ব বঙ্গ এবং আসাম আলাদা প্রদেশে পরিণত হয় এবং পশ্চিম বঙ্গ হিন্দি ও ওড়িশা ভাষাভাষী অঞ্চলগুলোর সাথে যুক্ত হয়। এই সিদ্ধান্ত বাংলার মানুষের মধ্যে প্রবল ক্ষোভ এবং বিরোধিতা তৈরি করে।
  • জাতীয়তাবাদী আন্দোলন: রবীন্দ্রনাথ এই বিভাজনের প্রতিবাদ জানাতে তার সাহিত্য এবং গান ব্যবহার করেন। “আমার সোনার বাংলা” গানটি ছিল সেই জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের অংশ, যা বাংলার মাটির প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং ঐক্য বজায় রাখার প্রতীক ছিল।
  • বাংলার মমত্ববোধ: গানটি বাংলার প্রকৃতি, কৃষিভিত্তিক জীবনযাত্রা, এবং বাংলার মানুষদের প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রকাশ করে। এতে দেশের প্রতি গভীর স্নেহ এবং শ্রদ্ধা ফুটে ওঠে, যা সেই সময়ের রাজনৈতিক উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশে এক ধরনের ঐক্য এবং প্রতিরোধের বার্তা দেয়।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের সময় “আমার সোনার বাংলা” গানটি বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রতীক হয়ে ওঠে এবং বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে গৃহীত হয়।

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত (pdf) হিসেবে গ্রহণ

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর, ১৯৭২ সালে “আমার সোনার বাংলা” দেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এটি বাঙালিদের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা ও আত্মপরিচয়ের প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়। সংগীতটি বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান দখল করে আছে এবং দেশের জাতীয় পরিচয়, ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে। জাতীয় সংগীতের মূল কবিতাটি মোট কত লাইনের? বাংলাদেশ সরকারের সংবিধানে “আমার সোনার বাংলা” কবিতার প্রথম দশ লাইন জাতীয় সংগীত হিসাবে পরিচিত হবে উল্লেখ আছে।

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত (pdf) কবিতাটির মূলভাব:

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত pdf গানটি বাংলার প্রকৃতি ও সংস্কৃতির প্রতি গভীর ভালোবাসার প্রতিফলন। গানটি বাংলার মাটি, ধানক্ষেত, নদী এবং মানুষের জীবনযাত্রার চিত্র তুলে ধরে। এতে দেশপ্রেম ও বাঙালির ঐক্যবদ্ধতার গুরুত্বের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

এইভাবে, “আমার সোনার বাংলা” শুধুমাত্র একটি সংগীত নয়, এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত এবং দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির গভীরে প্রোথিত।

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত pdf ডাউনলোড লিংক

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত pdf ডাউনলোড লিংক

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত pdf ডাউনলোড লিংক

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত pdf ডাউনলোড লিংক

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত pdf ডাউনলোড লিংক

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের চেষ্টাঃ

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত “আমার সোনার বাংলা” সম্পর্কে কিছু সময়ে পরিবর্তনের চেষ্টা হয়েছে, তবে তা সফল হয়নি। বিভিন্ন সময়ে এই জাতীয় সংগীতের পরিবর্তনের প্রস্তাব উঠেছে, যার কিছু কারণ ছিল:

  1. রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মতভেদ: বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের মধ্যে ভিন্ন মতাবলম্বীতা ও সাংস্কৃতিক নীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিছু রাজনৈতিক পক্ষের দাবি ছিল যে অন্য গানগুলোকে জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।
  2. গানটির বিষয়বস্তু: কিছু সমালোচক মনে করেন যে “আমার সোনার বাংলা” একটি পুরনো গান এবং এটি সমসাময়িক বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ ও সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব নাও করতে পারে।
  3. জাতীয় ঐক্য: পরিবর্তনের চেষ্টা হলেও, “আমার সোনার বাংলা” গানটি দেশের স্বাধীনতা, ঐক্য, এবং ইতিহাসের প্রতীক হয়ে উঠেছে। দেশের অধিকাংশ মানুষ এই গানটিকে তাদের হৃদয়ে ধারণ করে এবং পরিবর্তন প্রস্তাবের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়।

যদিও সময়ে সময়ে পরিবর্তনের প্রস্তাব উঠেছে, তবে দেশের জনগণের আবেগ এবং গানটির ঐতিহাসিক গুরুত্বের কারণে “আমার সোনার বাংলা” এখনও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে অটল রয়েছে।

তথ্য সূত্রঃ

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত– বাংলাদেশ সরকার পোর্টাল
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি PDF (২৫ লাইন)– কোর্সটিকা
জাতীয়-সংগীত-(পাঠ)সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়
জাতীয় সংগীত-ঢাকা বিভাগ পোর্টাল
আমার সোনার বাংলা-উইকিপিডিয়া
জাতীয় সংগীত – পিডিএফ ডাউনলোড-Vromon Tips

Amar Shonar Bangla | আমার সোনার বাংলা | বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত | The National Anthem of BangladeshShusmita Anis

জাতীয় সংগীত গাইতে হবে নিয়ম মেনে-Prothom Alo

 

আমাদের সাথে যুক্ত হতে পারেন: FacebookTwitterInstagramYoutube

 

https://bka.sh/next?c=signup&uuid=C1CV15H6K

7 thoughts on “বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত pdf

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।